পানির
অভাবে যে সব এলাকায় উৎপাদিত পাট পচনো সমস্যা হয়।সংশ্লিষ্ট এলাকার চাষী
ভাইদের জন্য বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট রিবণ রেটিং বা পাটের ছালকরণ ও
পচন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। ছাল পচানোর জন্য পানি, জায়গা ও সময় কম
লাগে, আঁশে কাটিংস হয় না, আঁশের মান ভালো হয়, এ গ্রেডের আঁশ পাওয়া
যায়,মূল্য ও বেশি পাওয়া যায়, পরিবহন খরচ কম লাগে, স্বাস্থ্যকর ও
পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা, পদ্ধতিটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক, পাট খড়ি শক্ত থাকে
বলে জ্বালানি ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহারে টেকসই এবং সুবিধাজনক। বাঁশের
হুকের দীর্ঘস্থায়ী লোহার সিংগেল রিবনার এবং ডাবল রোলার রিবনারের মাধ্যমে
ছালকরণ যন্ত্র বা রিবনারের সাহায্যে সহজেই কাঁচা পাট গাছ থেকে ছাল ছাড়ানো
যায়। সেক্ষেত্রে প্রথমে ৬ ফুট লম্বা এক খণ্ড বরাক বাঁশ নিয়ে এর যে কোন এক
প্রান্ত আড়াআড়িভাবে কাটতে হবে যেন বাঁশের প্রান্তটির দুদিক ইংরেজি টি
অক্ষরের মতো দেখায়। এবার বাঁশ খণ্ডটির গোড়ার কিছু অংশ প্রায় ১ ফুট মাটির
মধ্যে শক্ত করে পুঁতে দিতে হবে। পাশাপশি ৩ থেকে ৪ ফুট দূরে দূরে
প্রয়োজনমতো এমন বেশ কয়েকটি বাঁশের হুক স্থাপন করা যায়। এবার সে বাঁশের
হুকগুলোর সাথে একটি মুরুলী বাঁশ দিয়ে আড়াআড়িভাবে আড়া বাঁধতে হবে যার উপরে
পাট গাছ জমি থেকে কেটে এনে দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে। ১০০-১ ১০ দিন বয়সের
পাট কাটতে হবে।পাট গাছগুলো বাঁশের আড়ার উপরে দাঁড় করানোর পূর্ হাত দিয়ে
পাতা ঝরিয়ে গাছের গোড়ার ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি অংশ একটি শক্ত কাঠের হাতুড়ির
সাহায্যে থেতলে নিতে হবে। প্রতিটি গাছের গোড়ার থেতলানো ছালগুলো হাত
দিয়ে দু’ভাগ করে পাট গাছের গোড়া হুকের মধ্যে রাখতে হবে। গোড়ার ছালের দুভাগ
পৃথক পৃথকভাবে দু’হাত ধরে একসাথে জোরে টান দিলে দেখা যাবে পাটের ছালগুলো
সহজেই খড়ি থেকে আলাদা হয়ে গেছে এবং পাটখড়ি সামনের দিকে চলে গেছে।
এভাবে ৪ থেকে ৫টি পাট গাছের ছাল একসাথে বের করা সম্ভব। একইভাবে সিঙ্গেল
রোলার ও ডাবল রোলার রিবনারের সাহায্যেও পাটের রিবনিং করা যায়। বড়
মাটির চাড়িতে ছালগুরোকে গোলাকার মোড়া বেঁধে সাজিয়ে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে
চাড়িটি ভরে দিতে হবে। একটি বড় চাড়িতে প্রায় ৩০ কেজি ছাল পঁচানো যায়।
আশেপাশে ছোট ডোবা বা পুকুর বা খাল বা কম গভীরতা সম্পন্ন জলাশয় থাকে তবে
ছালগুলোকে গোলাকার মোড়া বেঁধে একটা লম্বা বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে পানির মধ্যে
ডুবিয়ে দিয়ে পঁচানো যাবে। ১বিঘা জমির পাটের ছাল পচানোর জন্য ১৮ ফুট
লম্বা, ৬ ফুট প্রস্থ এবং ৩ ফুট গভীর পরিমাপের গর্ত প্রয়োজন হয়। গর্তে ৮
০০০-৮৫০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। মোটা পলিথিন দিয়ে গর্তের তলা ও
কিনারা ঢেকে দিতে হবে।তারপর গর্তে প্রয়োজনমত পানি দিয়ে গর্তের ভিতরে মুড়ি
বাঁধা ছালগুলিকে ফেলতে হবে।সম্ভব হলে কচুরি পানা দিয়ে ছালের মোড়াগুলো ঢেকে
দিতে হবে। ১ কেজি কাচা ছাল পচানোর জন্য আড়াই থেকে ৩ লিটার পানির প্রয়োজন হয়।
প্রতি ১ মেঃটন কাঁচা ছালের জন্য ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার বা ২০ থেকে ৪০
লিটার পাট পচন পানি সংগ্রহ করে গর্তের পানির সাথে মিশিয়ে দিলে পানিতে
পচনকারী জীবাণুর তাড়াতাড়ি বংশবৃদ্ধি হয়ে পচন সময় ত্বরান্বিত হয়। ছাল
পানিতে ডুবানোর ১০ থেকে ১২ দিন পর দু’একটা ছাল পানি থেকে তুলে ভালো করে
ধুয়ে দেখতে হবে যদি আঁশগুলো পরস্পর ভালভাবে পৃথক হয়েছে বলে মনে হয তবে আর
দেরি না করে পরিষ্কার পানিতে ছাল ধুয়ে আঁশ সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার ছালগুলিকে বাঁশের আড়ায় রোদে শুকাতে হবে। আর্দ্রতা যেন ৮ থেকে ১০ ভাগের বেশি না থাকে। প্রতি বিঘা জমির পাটের ছালকরণে ৪/৬ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
উত্তর সমূহ
পানির অভাবে যে সব এলাকায় উৎপাদিত পাট পচনো সমস্যা হয়।সংশ্লিষ্ট এলাকার চাষী ভাইদের জন্য বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউট রিবণ রেটিং বা পাটের ছালকরণ ও পচন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। ছাল পচানোর জন্য পানি, জায়গা ও সময় কম লাগে, আঁশে কাটিংস হয় না, আঁশের মান ভালো হয়, এ গ্রেডের আঁশ পাওয়া যায়,মূল্য ও বেশি পাওয়া যায়, পরিবহন খরচ কম লাগে, স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা, পদ্ধতিটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক, পাট খড়ি শক্ত থাকে বলে জ্বালানি ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহারে টেকসই এবং সুবিধাজনক। বাঁশের হুকের দীর্ঘস্থায়ী লোহার সিংগেল রিবনার এবং ডাবল রোলার রিবনারের মাধ্যমে ছালকরণ যন্ত্র বা রিবনারের সাহায্যে সহজেই কাঁচা পাট গাছ থেকে ছাল ছাড়ানো যায়। সেক্ষেত্রে প্রথমে ৬ ফুট লম্বা এক খণ্ড বরাক বাঁশ নিয়ে এর যে কোন এক প্রান্ত আড়াআড়িভাবে কাটতে হবে যেন বাঁশের প্রান্তটির দুদিক ইংরেজি টি অক্ষরের মতো দেখায়। এবার বাঁশ খণ্ডটির গোড়ার কিছু অংশ প্রায় ১ ফুট মাটির মধ্যে শক্ত করে পুঁতে দিতে হবে। পাশাপশি ৩ থেকে ৪ ফুট দূরে দূরে প্রয়োজনমতো এমন বেশ কয়েকটি বাঁশের হুক স্থাপন করা যায়। এবার সে বাঁশের হুকগুলোর সাথে একটি মুরুলী বাঁশ দিয়ে আড়াআড়িভাবে আড়া বাঁধতে হবে যার উপরে পাট গাছ জমি থেকে কেটে এনে দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে। ১০০-১ ১০ দিন বয়সের পাট কাটতে হবে।পাট গাছগুলো বাঁশের আড়ার উপরে দাঁড় করানোর পূর্ হাত দিয়ে পাতা ঝরিয়ে গাছের গোড়ার ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি অংশ একটি শক্ত কাঠের হাতুড়ির সাহায্যে থেতলে নিতে হবে। প্রতিটি গাছের গোড়ার থেতলানো ছালগুলো হাত দিয়ে দু’ভাগ করে পাট গাছের গোড়া হুকের মধ্যে রাখতে হবে। গোড়ার ছালের দুভাগ পৃথক পৃথকভাবে দু’হাত ধরে একসাথে জোরে টান দিলে দেখা যাবে পাটের ছালগুলো সহজেই খড়ি থেকে আলাদা হয়ে গেছে এবং পাটখড়ি সামনের দিকে চলে গেছে। এভাবে ৪ থেকে ৫টি পাট গাছের ছাল একসাথে বের করা সম্ভব। একইভাবে সিঙ্গেল রোলার ও ডাবল রোলার রিবনারের সাহায্যেও পাটের রিবনিং করা যায়। বড় মাটির চাড়িতে ছালগুরোকে গোলাকার মোড়া বেঁধে সাজিয়ে রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে চাড়িটি ভরে দিতে হবে। একটি বড় চাড়িতে প্রায় ৩০ কেজি ছাল পঁচানো যায়। আশেপাশে ছোট ডোবা বা পুকুর বা খাল বা কম গভীরতা সম্পন্ন জলাশয় থাকে তবে ছালগুলোকে গোলাকার মোড়া বেঁধে একটা লম্বা বাঁশের সাথে ঝুলিয়ে পানির মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে পঁচানো যাবে। ১বিঘা জমির পাটের ছাল পচানোর জন্য ১৮ ফুট লম্বা, ৬ ফুট প্রস্থ এবং ৩ ফুট গভীর পরিমাপের গর্ত প্রয়োজন হয়। গর্তে ৮ ০০০-৮৫০০ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। মোটা পলিথিন দিয়ে গর্তের তলা ও কিনারা ঢেকে দিতে হবে।তারপর গর্তে প্রয়োজনমত পানি দিয়ে গর্তের ভিতরে মুড়ি বাঁধা ছালগুলিকে ফেলতে হবে।সম্ভব হলে কচুরি পানা দিয়ে ছালের মোড়াগুলো ঢেকে দিতে হবে। ১ কেজি কাচা ছাল পচানোর জন্য আড়াই থেকে ৩ লিটার পানির প্রয়োজন হয়। প্রতি ১ মেঃটন কাঁচা ছালের জন্য ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার বা ২০ থেকে ৪০ লিটার পাট পচন পানি সংগ্রহ করে গর্তের পানির সাথে মিশিয়ে দিলে পানিতে পচনকারী জীবাণুর তাড়াতাড়ি বংশবৃদ্ধি হয়ে পচন সময় ত্বরান্বিত হয়। ছাল পানিতে ডুবানোর ১০ থেকে ১২ দিন পর দু’একটা ছাল পানি থেকে তুলে ভালো করে ধুয়ে দেখতে হবে যদি আঁশগুলো পরস্পর ভালভাবে পৃথক হয়েছে বলে মনে হয তবে আর দেরি না করে পরিষ্কার পানিতে ছাল ধুয়ে আঁশ সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার ছালগুলিকে বাঁশের আড়ায় রোদে শুকাতে হবে। আর্দ্রতা যেন ৮ থেকে ১০ ভাগের বেশি না থাকে। প্রতি বিঘা জমির পাটের ছালকরণে ৪/৬ জন শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।